জাফর খান: মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে এই সংক্রান্ত অঙ্গীকার নামাটিতে স্বাক্ষর করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা ও দৈনিক ভোরের আকাশের সম্পাদক মনোরঞ্জন ঘোষাল। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের কল্যাণে এখনও অনেক কিছুই করা বাকি রয়েছে বলে আমাদের নতুন সময়কে বলেন বর্ষীয়ান এই সাংবাদিক। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ এই তিন মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে সোনার বাংলা গড়তে তিনি নিজেকে নিবেদিত রাখার প্রত্যয়েই এই দেহদান করেছেন বলেও জানান। দেহদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে কি ভাবনা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আমাদের নতুন সময়কে আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্ত্রী ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর বিএসএমএমইউ তে মৃত্যুবরণ করেন। আর মেয়েটি করোনায় মারা যান ২০২১ সালে।  স্ত্রীর শবদেহে মুখাগ্নির সময় মনের মাঝে উদয় হয় এই দেহটি বিনাশ না করে মানবতার কল্যাণে যদি দান করা যায় তবে তা বেশি কার্যকরি ভূমিকা রাখবে। এতে করে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কিছুটা হলেও গবেষণার কাজে আসবে। কুকুর, শেয়াল, আগুন বা মাটিতে লাশ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার চাইতে এই দেহদান কিছুটা হলেও চিকিৎসাশাস্ত্রের জন্য সহযোগী নিয়ামকের ভূমিকা রাখবে।‘  আর ভাবনাশ্রুত এসব তাড়না থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে তাকে  শক্তি যুগিয়েছে বলে আমাদের নতুন সময়কে জানান সাংবাদিক মনোরঞ্জন ঘোষাল। 

তবে প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকেরই এমন মহৎ উদ্যোগে সাড়া দেওয়া উচিত বলে আহবান জানান তিনি। ঋৎববফড়স ভরমযঃবৎ যধং হড় ৎবংঃ, হড় যড়ষরফধুং- উল্লেখ করে তিনি সবাইকে দেশে যে কোনো ভাল কিছুর স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করার অনুরোধও জানান সবার প্রতি। 

মনোরঞ্জন ঘোষালের দেহদানের আনুষ্ঠানিকতার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক (সার্জিক্যাল অনকোলজি) ডা. মো. রাসেল, কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি ইয়াছিন মোহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বিএসএমএমইউয়ে ৪৪ জন বিশিষ্টজনের মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার নামা রয়েছে। এছাড়াও এনাটমি বিভাগে দেশের ২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিকের মরণোত্তর দেহ সংরক্ষিত রয়েছে। সম্পাদনা: শামসুল বসুনিয়া